×
সোমবার ● ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ৫ ফাল্গুন ১৪৩১
সংবাদ শিরোনাম :
সংবাদ শিরোনাম: নলছিটিতে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেফতার রাজাপুর ও কাঁঠালিয়া উপজেলায় এনটিভিতে নিয়োগ পেলেন মো. নাঈম হাসান ঈমন সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও এতিমদের নিয়ে কক্সবাজার ভ্রমন করল দূর্বার তারুণ্য ফাউন্ডেশন নোনা জলের কষ্টের জীবন ৩৮ লাখ টাকা নিয়ে হজ্ব কাফেলা এজেন্সির পরিচালক জাকারিয়া উধাও নলছিটিতে ইয়াবাসহ আটক-২ শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্ম না হলে বাংলাদেশের জন্ম হতো না রফিকুল ইসলাম জামাল। ঝালকাঠিতে ট্রাক চাপায় প্রাণ গেল মোটরসাইকেল চালকের মির্জাপুরে নির্মাণ শ্রমিকদের ১২ দফা দাবিতে মানববন্ধন ও র‍্যালি অনুষ্ঠিত মঠবাড়িয়ায় রোপন করা ধানের বীজ নষ্ট করার অভিযোগ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে
Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)
উপার্যনক্ষম ছেলে হারিয়ে দিশেহারা স্বামী পরিত্যাক্তা বাকপ্রতিবন্ধী মা ইল্লিন বেগম
প্রকাশ : রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর , ২০২৪, ০৭:০৫:০০ পিএম
জাকির হোসেন, আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি:
GK_2024-09-08_66dda7f8d8eb0.jpg



অগ্নিদগ্ধ হয়ে ২৭ দিন চিকিৎসার পর ইহতিশামুল হক (১৭) নামের এক স্কুলছাত্রের আমতলীতে মৃত্যু হয়েছে। ১লা সেপ্টম্বর রবিবার সকাল ১১ টা ৪০ মিনিটের সময় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। গত ৫ আগস্ট আমতলী পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওওয়ামীলীগের সভাপতি মতিয়ার রহমানের বাড়িতে দুর্বৃত্তের দেওয়া আগুনে দগ্ধ হয় সে। ইহতিশামুল হক আমতলী পৌরসভার ১ নংওয়ার্ডের স্বামী পরিত্যাক্তা বাকপ্রতিবন্ধী ইল্লিøন বেগমের বড় সন্তান। উপার্যন ক্ষম সন্তান হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পরেছেন মা ইল্লন বেগমসহ পুরো পরিবার।
নিহত শেখ ইহতিশামুল হক ছাত্র হলেও পেশায় একজন ইলেকট্রিশিয়ান ছিলেন। বাবার অবর্তমানে তার আয়ে ৩ ভাই আর মাকে নিয়ে সংসার চলাত। সে আমতলী শেখ হাসিনা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির আইটি সাপোর্ট এন্ড আইওটি ব্যাসিকস বিষয়ের ছাত্র ছিলেন।
শেখ ইহতিশামুল হকের বাবা শেখ মো. রবিউল ইসলাম। সে খুলনার বাসিন্দা। প্রায় ৭ বছর আগে ইহতিশামুলের মা ইল্লিন বেগমের সাথে বিচ্ছেদ হয়। বিচ্ছেদের পর ইল্লিন বেগম ৩ ছেলে শেখ ইহতিশামুল হক, শেখ আসাদ উল্লাহ রায়হান ও শেখ হোসাইন আহম্মদ ত্বোহাকে নিয়ে বাবার বাড়ী আমতলী পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের সিকদার বাড়িতে চলে এসে মায়ের সঙ্গে বসবাস করে আসছেন।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর আমতলী পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. মতিয়ার রহমানের বাসভবনে ভাংচুর ও আগুন দেয় একদল দুর্বৃত্ত। আগুনের খবর পেয়ে উৎশুক জনতার সাথে আগুন নেভাতে গিয়ে সেখানে আটকা পড়েন ইহতাশিমুল । আগুন আয়ত্বে আসলে স্থানীয় ও স্বজনেরা তাকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

ওই হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তাৎক্ষনিক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। ওই হাসপাতালে নেওয়ার পর তার অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ৬ আগস্ট মঙ্গলবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। ওই হাসপাতালের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১ সেপ্টম্বর রবিবার সকাল ১১.৪০ মিনিটের সময় তার মৃত্যু হয়। ওই দিন ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরের দিন সোমবার সকাল ৭টায় আমতলীতে দ্বিতীয় দফা জানাজা শেষে নানা বাড়ির গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
নিহত শেখ ইহতাশিমুলের মেঝ ভাই শেখ আসাদ উল্লাহ আমতলী শেখ হাসিনা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র। সে আইটি সাপোর্ট এন্ড আইওটি ব্যাসিকস বিষয়ে পরাশুনা করেন। ছোট ভাই শেখ হোসাইন আহম্মদ ত্বোহা ওয়াবদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র।
ছেলেকে হারিয়ে মা ইল্লিন বেগম ও ছোট দুই ভাই শেখ মো. আসাদুল্লাহ রায়হান ও শেখ হোসাইন আহম্মেদ ত্বোহা বাকরুদ্ধ হয়ে পরেছে।

ইহতাশিমুল হক লেখাপড়ার পাশাপাশি ইলেকট্রিশিয়ানের কাজ করতেন। তার আয় দিয়েই চলত মা ও তিন ভাইয়ের সংসার। ছোট ভাই আসাদুল্লাহ রায়হান ও শেখ হোসাইন আহম্মেদ ত্বোহার লেখা পড়ার খরচও চালাতেন ইহতিশামুল হক। তার এরকম আকস্মিক মৃত্যুতে পুরো পরিবার এখন অথৈ সাগরে ভাসছে। কি করে তাদের সংসার চলবে এখন সেই চিন্তার অস্থির পুরো পরিবার।

মেজ ভাই শেখ মোহাম্মদ আসাদুল্লাহ রায়হান বলেন, বাবা থাইাক্যাও নাই। বড় ভাই ইহতিশামুলের আদর ভালোবাসার কারনে কখনো বাবা নাই তা বুঝতে পারি নাই। আমাদের এতিম করে ভাই আমার চলে গেছে। এটা কোন অবস্থাতেই আমরা মেনে নিতে পারছি না। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমার ভাইকে দুর্বৃত্তরা আগুনে ঠেলে দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। আমি এ হত্যার বিচার চাই।
নিহত ইহতিশামুলের খালা কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র অন্দোলন শুরু হওয়ার পর বারবার সে আন্দোলনে যোগ দিতে ঢাকায় যেতে চেয়েছিল। আর বার বার বলতো আমি আন্দোলন করে জয়ী হয়ে বাসায় আসবো। বাবা ও ঠিক বাসায় আইছে জীবিত নয় লাশ হয়ে। ইহতিশামুল মারা যাওয়ায় পরিবারটির এখন পথে বসা ছাড়া আর কোন উপায় নাই। আশা করি সরকার ওদের পাশে দাড়াবে।
বাকপ্রতিবন্ধী মা ইল্লিন বেগম কান্নাজরিত কন্ঠে বলেন, বাবা মোর স্বামী নাই। স্বামী ছাইর‌্যা দিচ্ছে। এক কাপুরে বাবার বাড়ি চইল্যা আই। মোর মায় ব্যামালা কষ্ট হরছে। হেইয়ার পর পোলাডায় বড় অইয়া ল্যাহা পড়া করার পাশাপাশি কারেন্টের কাম কইর‌্যা সংসার চালাইত। আবার ছোড দুই ভাইর লেহা পরার খরচও দিত। এহন মোর পোলাডায় মইর‌্যা গ্যাছে কি দিয়া মুই সংসার চালামু আর পোলা দুইডার লেহা পড়া করামু।
আমতলী শেখ হাসিনা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড.ইজ্ঞিনিয়ার শান্তি রজ্ঞন সরকার বলেন, ইহতিশামুল খুব ভদ্র এবং শান্ত স্বভাবের ছিল। লেখাপড়ায়ও বেশ ভালো ছিল। কলেজের পক্ষ থেকে আমরা তাকে আর্থিক সহযোগিতা করেছি।

আরও খবর

Ad for sale 225 x 270 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
🔝