সংবাদ শিরোনাম: |
বরগুনার আমতলী নতুন বাজার চৌরাস্তা মোড় এলাকায় স্থানীয় লোকাল বাসের হেলপারকে মারধরের জেরে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের বহনকারী দুটি বাসে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় বাসের কাঁচের আঘাতে সাত শিক্ষার্থী ও একজন শিক্ষকসহ মোট নয়জন আহত হয়েছেন। আহত বাস হেলপার ছালমান (২৫) গুরুতর অবস্থায় পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ৬৫ জন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী পরিচালক ও রেজিস্ট্রার ফারহান রহমানের নেতৃত্বে গত ১০ মে বরিশাল আঞ্চলিক স্কাউট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সপ্তাহব্যাপী একটি প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশ নেন। প্রশিক্ষণ শেষে শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে তারা দুটি রিজার্ভ বাসে করে কুয়াকাটায় ভ্রমণে যাচ্ছিলেন। বাস দুটি আমতলীর নতুন বাজার এলাকায় পৌঁছালে যানজটের সৃষ্টি হয়। এসময় শিক্ষার্থীদের একটি বাসের চালক হর্ন বাজালে বরিশাল-কুয়াকাটা রুটের লোকাল বাস বিসমিল্লাহর হেলপার মো. ছালমান তাদের নিষেধ করেন।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিসমিল্লাহ বাসের হেলপার ছালমান এবং শিক্ষার্থীদের বহনকারী শ্যামলী পরিবহনের হেলপার আব্দুস ছালামের মধ্যে প্রথমে বাগবিতণ্ডা ও পরে মারামারি শুরু হয়। অভিযোগ উঠেছে, এসময় শ্যামলী পরিবহনের বাসে থাকা ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির কয়েকজন ছাত্র আব্দুস ছালামের পক্ষ নিয়ে ছালমানকে মারধর করেন। গুরুতর আহত ছালমান ঘটনাস্থলেই জ্ঞান হারান এবং পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এই ঘটনার জেরে স্থানীয় কয়েকশ উত্তেজিত জনতা শিক্ষার্থীদের বহনকারী বাস দুটির গতিরোধ করে হামলা চালায় এবং ব্যাপক ভাঙচুর করে। বাসের ভেতরে থাকা শিক্ষার্থীরা বাঁচানোর জন্য চিৎকার করতে থাকেন। খবর পেয়ে আমতলী থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে শিক্ষার্থীসহ বাস দুটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। হামলায় আহত শিক্ষার্থীরা স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। আহতদের মধ্যে রয়েছেন সাব্বির (২২), জানামুল হক (২৪), সাকিব (২৪), নাইহান (২৪), মুশফিক (২১), রিমন (২৪), জিনিয়া (২১) এবং শিক্ষক খানজাহান আলী (৪৬)।
স্থানীয় বাসচালক মো. জাহিদ অভিযোগ করেন, তার বাসের হেলপার ছালমানকে শ্যামলী পরিবহনের হেলপার ও ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা মিলেই মারধর করেছে। তবে শ্যামলী পরিবহনের হেলপার আব্দুস ছালাম ছাত্রদের মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বিসমিল্লাহ বাসের যাত্রী মো. নুরুল আমিন জানান, দুই হেলপারের মারামারির সময় কয়েকজন ছাত্র হেলপার ছালমানকে মারধর করে, যার কারণে স্থানীয় জনতা উত্তেজিত হয়ে বাসে হামলা করে।
শ্রমিক ইউনিয়ন আমতলীর নেতা মো. আল-আমিন এই ঘটনার বিচার দাবি করেছেন।
অন্যদিকে, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সহকারী রেজিস্ট্রার ফারহান রহমান বলেন, দুই বাসের হেলপারদের মধ্যে মারামারি হয়েছে, সেখানে তাদের কোনো ছাত্র জড়িত ছিল না। তিনি অভিযোগ করেন, স্থানীয় বাসের স্টাফ ও কিছু উচ্ছৃঙ্খল লোক তাদের বাসে হামলা করে এবং কাঁচ ভাঙচুর করে। তাদের বাসে নারী শিক্ষার্থীরাও ছিলেন এবং হামলায় সাত শিক্ষার্থী ও একজন শিক্ষক আহত হয়েছেন। এই ঘটনায় শিক্ষার্থীরা traumatized বলে তিনি জানান।
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আরিফুর রহমান জানান, বাস মালিক, শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা এবং ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে উভয় পক্ষের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে সমঝোতা করা হয়েছে।