সংবাদ শিরোনাম: |
কলাপাড়ায় আন্ধামানিক নদীর পাশে কোল ঘেঁষে ঐতিহ্যবাহী ফরিদগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শ্রেনিকক্ষ পরিত্যক্ত ও ভবন সঙ্কট জরাজীর্ণ টিনের ঘরে পাঠদান। ২০০০ সালে ফ্যাসিলিটিজ (শিক্ষা বিভাগ) ভবনটি নির্মাণ করে দেয়। নির্মাণের ২৪ বছরের মধ্যেই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করায় শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বর্তমানে ওই বিদ্যালয়ের পাঠদান চালাতে হচ্ছে পাশের জরাজীর্ন টিনের ঘরে।স্থানীয়, বিদ্যালয় ও তথ্য সুত্রে জানা যায়, ফরিদগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্টিত হয় ১৯৬৮ সালে। ৭৭.০০ শতাংশ জমির ওপর স্থাপিত হয় ফরিদগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়। জুনিয়র এমপিও স্বীকৃতি পায় ১৯৮৫ সালে ও মাধ্যমিক এমপিও অনুমোদন পেয়ে ছিলেন-১৯৯৫সালে। তখন থেকেই নীলগঞ্জ ইউনিয়নে মাধ্যমিক শিক্ষায় গুরুত্বপুর্ন অবদান রেখে আসছে বিদ্যালয়টি। প্রতিষ্টানটি অসংখ্য মেধাবী মুখ তৈরি করেছে। যারা আজ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সুপ্রতিষ্টিত। প্রায় সারে তিন শত শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এটি কলাপাড়ার মধ্যে শীর্ষ ফলাফল ধরে রেখেছে। এ ছাড়া বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থান সংকুলান হচ্ছে না।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জ্ঞানচর্চা ও উচ্চশিক্ষার প্রসারে এই শিক্ষা নিকেতনের অনন্য উজ্জ্বল ভুমিকা এবং অবদান থাকলেও দির্ঘ দিন ধরে বহুমুখী সংকটে নিমজ্জিত বিদ্যালয়টি। বিদ্যালয়ের প্রতিটি কক্ষের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়েছে। ছাদ ও বারান্দার পিলারগুলোর ঢালাই খসে রড বেরিয়ে পড়েছে। দরজা-জানালাগুলো ভাঙ্গা। সম্প্রতি ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ছে। জংধরা ছাদের রডগুলো বের হয়ে আছে। অনেক স্থানে দেয়ালে ফাটল ধরেছে। সামান্য বৃষ্টিতেই পানি চুইয়ে পড়ে ভবনের ভেতরে। এতে করে যেমন শঙ্কায় দিন পার করছে শিক্ষার্থীরা, তেমনি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় স্কুলের গুদামঘর ও টিনশেডে ক্লাস চালাতে বাধ্য হচ্ছে তারা। পাঠদান কক্ষে বাঁশের সঙ্গে ফ্যান ঝোলানো রয়েছে। জরাজীর্ণ ভবনটিতে রয়েছে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকের কার্যালয়। এদিকে দীর্ঘদিন মেরামত না হওয়ায় ভবনটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আবাসন সঙ্কট নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। তাই এই বিদ্যালয়ের অবকাঠামো প্রয়োজন।
১০ম শ্রেনির শিক্ষার্থী তামিম রহমান বলেন, আমাদের বিদ্যালয় দুটি টিনের ঘর ও ছোট একটি বিল্ডিং রয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা অনেক বেশি তাই যে জায়গা বিদ্যালয় পাঠদান করতে প্রয়োজন তা নেই, তাই খুবই কষ্ট করে ক্লাস করতে হয়। আগে যে ভবনটিতে ক্লাস করতাম তা এখন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তাতে কোন ভাবে আমাদের পক্ষে পাঠদান করা সম্ভবনা। জরুরী ভিত্তিতে বিদ্যালয় একটি ভবন নির্মান করা প্রয়োজন।
৯ম শ্রেনির শিক্ষার্থী আকবর খান জানান, জ্ঞানচর্চা ও প্রসারে উজ্জ্বল ভুমিকা থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে বহুমুখী সংকটে নিমজ্জিত বিদ্যালয়টি। এজন্য শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
স্থানীয় অভিভাবক জালাল গাজী জানায়, নীলগঞ্জ ইউনিয়নের ১০/১২ গ্রামের মধ্যে এই বিদ্যালয়। কাছাকাছি কোন বিদ্যালয় না থাকায় ওই সব গ্রামের ছাত্র-ছাত্রীদের ফরিদগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পাঠদানের জায়গায় সংকুলান হয়ে পড়েছে।
ফরিদগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো: জামাল উদ্দিন জানান, ভবনটির জরাজীর্ণ দশার কারণে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ শেষ নেই। এমন অবস্থায় ক্লাস নিতে হচ্ছে পাশের ছোট টিনসেড ঘরে। এ কারণে পাঠদানের কার্যক্রম চালাতে কষ্ট হচ্ছে। কয়েকমাস আগে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা ও উপজেলা চেয়ানম্যানসহ বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করে গেছে তারা বলেছেন বিদ্যালয়টি ঝুঁকিপুর্ন হয়ে পড়েছে তাই এখন এখানে ক্লাস করার দরকার নেই।
কলাপাড়া উপজেলা শিক্ষা একাডেমিক সুপারভাইজার মো: মনিরুজ্জামান জানায়, ফরিদগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর বরাবর একটি দরখস্ত দিতে বলা হয়েছে।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর পটুয়াখালী কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী কলাপাড়ায় দায়িত্বরত মো: ইমরান হোসাইন বলেন, আমি বিদ্যালয় গিয়ে খোঁজ খবর নিবো। আমি নতুন আসছি। তবে পরবর্তীতে নতুন ভবনের জন্য কি ব্যবস্থা করা যায় তা ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেন তিনি।