×
বুধবার ● ৬ নভেম্বর ২০২৪ ২২ কার্তিক ১৪৩১
সংবাদ শিরোনাম :
সংবাদ শিরোনাম: রাজাপুরে মাহিন্দ্রা-পিকআপভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২, আহত -৫ বরগুনা -৩ সংসদীয় আসন পুনর্বহালের দাবিতে বামনায় সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন ঢাকাস্থ বরগুনা ফোরামের বরগুনা উপজেলা সভাপতি- ড. নুরুল্লাহ মাদানী এবং সেক্রেটারি- ইত্তিজা হাসান ফরিদ বাউফলে সাংবাদিকদের সঙ্গে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের মতবিনিময় বাউফলে ছেলেকে জ‌মি না দেওয়ায় সালিশগণের হাতে বৃদ্ধ বাবা খুন বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক গ্রেপ্তার যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবানন থেকে ফিরেছেন আরও ৭০ বাংলাদেশি দশমিনায় শালিসদের বিরুদ্ধে বৃদ্ধকে হত্যার অভিযোগ অবৈধভাবে মাটি বিক্রি করায় ভাঙছে পিচঢালা রাস্তা, আতঙ্কিত এলাকাবাসী সারাদেশে সোমবার শেষ হচ্ছে মাছ ধরায় সরকারী নিষেধাজ্ঞা, রবিবার মধ্যরাতে গভীর সমুদ্রে যাচ্ছে জেলেরা
Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)
কলাপাড়ায় প্রকৃতির বৈরীতা স্বত্তেও সমুদ্র উপকূলের কৃষকরা আমন ধানের স্বপ্ন বুনছে
প্রকাশ : শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর , ২০২৪, ১০:১৬:০০ পিএম
রাসেল কবির মুরাদ নিজস্ব প্রতিবেদক::
GK_2024-09-21_66eef26d0fc00.jpg


কলাপাড়ায় আমন ধানের স্বপ্ন বুননে শেষ সময়ের ব্যস্ততায় এখন দিন পার করছেন কৃষক। প্রকৃতির বৈরীতায় এবার কিছুটা বিলম্বিত হলেও দেশের দক্ষিন সমুদ্র উপকূলের প্রত্যন্ত এলাকায় দল বেঁধে, রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে জমিতে আমন ধানের চারা রোপন করতে দেখা গেছে কৃষককে। এতে দিগন্ত জুড়ে ক্রমশ: দৃশ্যমান হয়ে উঠছে আমন ধানের চারার সবুজ পাতার সমারোহ। এবছর কলাপাড়ায় আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ৩০ হাজার ৭০০ হেক্টর। ইতিমধ্যে ২৫ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে আমন চাষাবাদ শেষ করেছে কৃষক। বৈরী আবহাওয়া কেটে যেতেই লক্ষ্যমাত্রার অবশিষ্ট জমিতে আগামী দুচার দিনের মধ্যেই আমন চাষাবাদ শেষ হওয়ার কথা জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। স্থানীয় কৃষি বিভাগের দাবী, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্নতা অর্জনে সার্বক্ষনিক কৃষকের পাশে রয়েছে কৃষি বিভাগ। কৃষককে দেয়া হচ্ছে প্রনোদনার বীজ, সার। কৃষকের চাষাবাদ সংক্রান্ত যেকোন সমস্যা সমাধানে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাঠ পর্যায়ে অবস্থান বাধ্যতামূলক।

কৃষি বিভাগের তথ্য সূত্রে জানা যায়, দেশের দক্ষিনাঞ্চলের দুর্যোগপ্রবন এলাকায় প্রতিবছরই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আমন ধানের বাম্পার ফলনে উচ্ছ্বসিত কৃষক। কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে কৃষককে সার্বক্ষনিক পরামর্শ দেয়ায় প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করেও কৃষিতে সফলতা পেয়েছে কৃষক। তবে স্লুইজগেট আটকে প্রভাবশালীদের মাছ চাষে কৃষকের দু:শ্চিন্তা বাড়ে চাষাবাদ মৌসুমে। এতে কৃষি ক্ষেত থেকে অতি বর্ষন ও অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি নামানো এবং প্রয়োজনের সময় নদী-খালের পানি ওঠানো সম্ভব হয় না কৃষকের পক্ষে। এছাড়া চাষাবাদ মৌসুমে সিন্ডিকেট করে বিসিআইসি ও খুচরা ডিলাররা সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশী দামে সার, কীটনাশক বিক্রী করায় ঋনগ্রস্ত কৃষকের চোখে মুখে ফুটে ওঠে দু:শ্চিন্তার ছাপ।

শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,  মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের নিয়ে গ্রুপ করে কৃষি প্রশিক্ষনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে কৃষককে। অফিসেও দেয়া হচ্ছে প্রশিক্ষন। আগে যারা দিনমজুরীর কাজ করে সংসার চালাতে হিমশিম খেতো, তারা এখন কৃষি বিভাগের প্রশিক্ষন পেয়ে ধান চাষের পাশাপাশি পতিত জমিতে লাউ, কুমড়া, করলা, ঝিঙা, বরবটি, শষাসহ মৌসুম ভেদে বিভিন্ন সবজি চাষ করে সফলতা অর্জন করেছে। এতে স্বচ্ছলতা ফিরেছে তাদের পরিবারে। ফলে কৃষিতে আগ্রহ বেড়েছে বেকার যুবকদের। ঘূর্নিঝড় রেমাল পরবর্তী কিছু প্রয়োজনীয়  কর্মসূচীর আওতায় উপকূলের ১ হাজার ৮ শ ৯০ জন কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে জনপ্রতি ৫ কেজি ধানবীজ ও ২০ কেজি রাসায়নিক সার বিতরন করা হয়েছে। এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রনোদনা কর্মসূচীর আওতায় ১ হাজার ২ শ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে ৬ হাজার পিচ নারিকেল চারা বিতরন করা হয়েছে। এছাড়া কৃষককে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদে উদ্বুদ্ধ করতে চাষাবাদের জন্য ট্রাক্টর, কীটনাশক স্প্রে করার জন্য স্প্রে মেশিন, ফুট পাম্প, ধান কাটার জন্য হারভেষ্টার সুবিধা দেয়া হচ্ছে।

টিয়াখালী ইউনিয়নের বিশকানি এলাকার কৃষক শাহজাহান মিয়া বলেন, এবছর ঘূর্নিঝড় রেমালের তান্ডব যেতে না যেতেই একের পর এক নিম্ন চাপের প্রভাবে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিসহ অতিরিক্ত বৃষ্টিতে আমন বীজ তলা পঁচে গেছে। নতুন করে বীজ তলা তৈরী করে আবার ধানের চারা করতে হয়েছে।

ধূলাসার ইউনিয়নের নতুনপাড়া এলাকার আরেক কৃষক দবিউদ্দিন জানান, এবছর একর প্রতি জমি চাষাবাদে খরচ পড়েছে ১৫ হাজার টাকা। এখন জমির আগাছা নিধনসহ সার, কীন নাশক স্প্রে করতে হবে। সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত মূল্যে সার, কীটনাশক বিক্রী করছেন ডিলাররা।  চাপলি বাজারের খুচরা ডিলারের দোকান থেকে প্রতি বস্তা টিএসপি সার কিনতে হয়েছে ১৮০০ টাকা, ইউরিয়া ১৪০০ টাকা এবং ড্যাপ সার ১২০০ টাকা। এছাড়া কীটনাশকও কিনতে হয়েছে বেশী দামে।

কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষন কর্মকর্তা আ: রহমান বলেন, কলাপাড়ায় এ বছর উফশী জাতের উচ্চ ফলনশীল আমন ধান বিআর-১১, বিআর-২২, বিআর-২৩, স্বর্নমুশুরী, ব্রী ধান-৪৯, ব্রী ধান-৫১, ব্রী ধান-৫২ চাষ হয়েছে শতকরা ৭০-৭৫ ভাগ। এছাড়া স্থানীয় জাতের সাক্ষরখানা, রাজাশাইল, কাজল শাইল, বিংগা মনি, সাদা মোটা, মাথা মোটা ও কুটি অগ্রানি জাতের আমন ধানের চাষ করেছেন কৃষক।

কলাপাড়া উপজেলা কৃষি অফিসার মো: আরাফাত হোসেন জানায়, কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে কৃষককে সার্বক্ষনিক সেবা দিচ্ছে। আমি নিজেও প্রতিদিন এক একটি গ্রামে গিয়ে কৃষি কাজ পরিদর্শনসহ কৃষকের সাথে কথা বলি। কৃষকের যেকোন সমস্যা দ্রুত সমাধানের উদ্দোগ নেই। সার ডিলারদের অফিস থেকে তদারকি করা হচ্ছে। সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশী মূল্যে সার বিক্রীর কোন সুযোগ নেই। কারও বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে নীতিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
 

আরও খবর

Ad for sale 225 x 270 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
🔝