সংবাদ শিরোনাম: |
শিশুরা সাধারণত কৌতুহল প্রিয়। সবকিছুতেই তার কৌতুহল। কৌতুহল থেকেই অজানা প্রশ্ন ও অবান্তর বিষয় মাথায় চলে আসে। শিশুদের এই প্রশ্ন ও অবান্তর বিষয়ের উত্তরগুলো আমাদের কাছে অজানা। পরিবারের সদস্যদের কাছে শিশুরা প্রশ্নের উত্তর প্রত্যাশা করে । কে দিবে তার উত্তর? এত উত্তর আমাদের জানাও নেই। জানলেও সময় নেই। কয়টার উত্তর দিবেন। এক প্রশ্নের উত্তর দিতে না দিতেই পাল্টা প্রশ্ন। প্রশ্নের জবাব দিতে দিতে বিশেষ করে বাবা-মা বিরক্ত। ‘আর প্রশ্ন করবি না, চুপ করে থাক’- এরকম আমরা বলে থাকি । আবার তার সাথে একটু মিলিয়ে বলি এত ছোট মানুষ কি পাকা পাকা কথা বলে, কি অবান্তর প্রশ্ন করে। এখানেই আমারা ভুল করে থাকি। আমরা শিশুকে বুঝতে চাই না তার বয়সের আলাদা একটা ভাবনা ও আলাদা জগৎ আছে। বয়স অনুযায়ী প্রতিটি মানুষের আলাদা ভাবনা আলাদা ভাবনার জগৎ থাকে। শিশুর এই ভাবনার জগতের উত্তর কে দিবে? নিশ্চয় পরিবারে সদস্যদের উত্তর দিতে হবে। প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার পর নতুন নতুন প্রশ্ন আসবে শিশুর আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে। শিশুর শিখন শুধু লিখতে পারা বা পড়তে পারা নয়। কল্পনার জগতের মধ্যেই রয়েছে শিশুর শিখন। ছোট বেলায় শিশু যত প্রশ্ন করবে ততই তার জানার আগ্রহ বাড়তে থাকবে। নতুন প্রশ্ন নতুন জানার পরিধি বৃদ্ধি । এই গুলো আমরা বুঝতে চাই না। কারণ বড়দের ও শিশুদের মধ্যে রয়েছে বয়সের ব্যাপক পার্থক্য । ২ বা ৩ বছর বয়সে আমরা কে কি করেছি কিছুই মনে করে বলতে পারবো না৷ মনে করতে হবে এই বয়স আমারও ছিল। তখন হয়তো আমার বাবা-মা এই বিষয়গুলো এত ভালো ভাবে খেয়াল করে ভাবেনি। বর্তমান যুগে বাবা-মা সন্তানের প্রতি অনেক সচেতন। আমরা যেন এই ভুলের দিকে না যাই। শিশুরা যতই প্রশ্ন করুক উত্তর দিন। কখনো প্রশ্নের ভুল বা মিথ্যা উত্তর দিবেন না । সবসময় ইতিবাচক কথা বলবেন। এই বয়সে যা বলবেন শিশু তাই শিখবে। সারাজীবন মনে গেথে যাবে। শিশুর এই বয়সের শিখন পরিধি আমরা কোন মাপকাঠি দিয়ে পরিমাপ করতে পারবো না। আমাদের যদি শিশু সম্পর্কে ধারণা থাকে তাহলে কিছু কিছু বিষয়ে আন্দাজ করতে পারবো। সময়ে সময়ে সুযোগ বুঝে আপনিও প্রশ্ন করুন। শিশু যত সহজে প্রশ্ন করতে পারবে আপনি তত সহজে তার উপযোগী প্রশ্ন করতে একটু কঠিন হবে। তার মত করে ভাবতে শিখলেই পারবেন। এতে করে শিশু অনেক আনন্দ পাবে। আর আনন্দ থেকে শিখন সারাজীবনের জন্য স্থায়ী হয়ে থাকবে। আসুন আমরা সবাই শিশুর অজানা প্রশ্ন শুনি ও উত্তর দিয়েই তার শিখনকে সমৃদ্ধ করি।
লেখক: মো: হাফিজুর রহমান, ইন্সট্রাক্টর, ইউআরসি, বামনা, বরগুনা